Friday 23 June 2017

Hijibiji - Jogindranath Sarkar (And Sukumar Ray)

হিজিবিজি ।। যোগীন সরকার ( এবং রায় সুকুমার )


== এই ব্লগে প্রদর্শিত অপরের রচনাংশ, স্থিরচিত্র বা অলংকরণের কপিরাইট আমাদের নয় ==
পোস্টের বক্তব্য স্পষ্টতর করতে এগুলি সাজানো হচ্ছেকোনও ব্যবসায়িক স্বার্থে নয়

From the 'Blogus' blog.
BlOGUS ব্লগে হিজিবিজি ।। যোগীন সরকার ( এবং রায় সুকুমার )
যোগীন্দ্রনাথ সরকার (১৮৬৬ ১৯৩৭) ও সুকুমার রায় (১৮৮৭ ১৯২৩)


এক্কাগাড়ি ছুটল যখন !
From the 'Blogus' blog.
“এক্কা গাড়ী খুব ছুটেছে”,
যোগীন্দ্রনাথ সরকার-এর

হাসি খুসি’ প্রথম ভাগ

শিল্পী ।। অজ্ঞাত

একটু থমকে যেতে হয় ।
পঙক্তির সঙ্গে অলংকরণের এমন অমিল পাওয়া দুষ্কর ।
ছোটা তো দুরস্থান, হাঁটবারও কোনো লক্ষণ নেই এক্কাগাড়ির অশ্বের

যোগীন্দ্রনাথ সরকার-এর ‘হাসি খুসি’ প্রথম ভাগ  (১৮৯৭) প্রকাশের সময় সুকুমার রায় বছর দশেকের বালক
লেখা-রেখার এই অসংগতি কি তাঁর চোখে পড়েছিল ?


নইলে তিন দশক পরে, স্ব-সম্পাদিত ‘সন্দেশ’-এ , কোনো পূর্বাপর প্রসঙ্গ ছাড়াই কেন এই লাইনখানি স্বহস্তে চিত্রিত করার দায়িত্ব নেওয়া ?
আর সে কী অব্যর্থ অলংকরণ
যানসমেত বাহন বুঝি বেরিয়ে আসে পৃষ্ঠা ভেদ করে !
From the 'Blogus' blog.
এক্কাগাড়ী খুব ছুটেছে” - ,
সন্দেশ’, শ্রাবণ ১৩৩০ ।
শিল্পী ।। সুকুমার রায়


অবশ্য ‘হাসি খুসি’ নয় । যোগীন্দ্রনাথ-এর অপর এক গ্রন্থ নিয়ে আজ ‘হিজিবিজি’ বকতে বসেছে BlOGUS
এক্কাগাড়ি ব্যতিক্রম । সাধারণভাবে কিন্তু সরকার মহাশয়ের বইতে ছড়াছবির বন্ধুত্ব হত অটুট ।
হিজিবিজি’-র (১৯১৬) কথাই ধরুন

এর বেশ কিছু কবিতা
, অলংকরণ ব্যতীত অসম্পূর্ণ  
হালে নানা সংকলনে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সময়, মূল চিত্রসমূহ বর্জিত হয়েছে । ফলে সেই ছড়াগুলির অর্থই গেছে হারিয়ে ।

From the ‘Blogus’ blog.
যোগীন্দ্রনাথ সরকার প্রণীত ‘হিজিবিজি’,
১৮ শ সংস্করণ, সিটি বুক সোসাইটি ।




যোগীন্দ্রনাথ এবং সুকুমার
যোগীন্দ্রনাথ-এর তিন বছর আগে জন্মেছিলেন বন্ধু উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
দুজনেই গদ্যে-পদ্যে ছোটদের জন্য মহাকাব্যের অনুবাদ করেছেন, উপকথা অবলম্বনে গল্প এবং জীবজগৎ নিয়ে সরস নিবন্ধ লিখেছেন ।
যোগীন্দ্র-প্রতিষ্ঠিত সিটি বুক সোসাইটি থেকে প্রকাশিত হয়েছিল উপেন্দ্রকিশোর রচিত / চিত্রিত ‘ছেলেদের রামায়ণ’ (২ য় সংস্করণ), ‘ছেলেদের মহাভারত’ এবং ‘মহাভারতের গল্প’
যোগীন্দ্রনাথ সম্পাদিত নানা গ্রন্থেও সংকলিত হয় উপেন্দ্র-রচনা ।

হিজিবিজি’ গ্রন্থটি সিটি বুক সোসাইটি-রই ফসল ।
যোগীন্দ্র একসময় সিটি কলেজিয়েট স্কুল-এ পড়াতেন ন’ বছর বয়সে সেখানকার ছাত্র হন সুকুমার রায়
পিতৃবন্ধুকে কি তিনি শিক্ষকরূপে পেয়েছিলেন ? জানা যায় না ।
কিন্তু বাংলা ননসেন্স কাব্যরচনার ক্ষেত্রে বোধহয় তাঁর সার্থক পূর্বসূরি যোগীন্দ্রনাথ-ই

হিজিবিজি’-তে মিলবে যোগীন সরকার-এর লেখা কয়েকটি সুকুমার-মেজাজের আজগুবি কবিতা


হিজিবিজি-র সূচিপত্র ।
অধুনালুপ্ত এই বইটির ১৮ শ সংস্করণ (সাল অজানা) পাওয়া গেছে
মনে হল এর সচিত্র কিয়দংশ
BlOGUS ব্লগে সংরক্ষণ  করলে মন্দ হয় না ।

ধাঁধা বাদ দিলে ‘হিজিবিজি’ গ্রন্থে ছোট-বড় মিলিয়ে উনিশটা ছড়া ।
সম্পূর্ণ তালিকা এইরকম
:
১) বর্ণের ছড়া

২) সাবধান !
৩) তালপাতার সিপাই
৪) ইজি-চেয়ার
৫) কেমন হ’ত !
৬) গঙ্গারামের খুড়ো
৭) অদল-বদল
৮) সখের গাড়ী
৯) সাধের নৌকা
১০) ছেলের চিঠি
১১) ভাগ্যে রক্ষে
১২) দোলনা
১৩) চিৎপটাং
১৪) বাপরে বাপ্
১৫) আজব চিড়িয়াখানা
১৬) উল্টা বুঝলি রাম !
১৭) ঘোড়ার ডিম
১৮) গোলক ধাঁধা
১৯) হ-য-ব-র-ল (স্বর্গীয় সুকুমার রায় চৌধুরী লিখিত)
২০) নাক ! – সাবধান !
২১) বিয়ে-পাগলা

দেখা যাচ্ছে, ১৯ নম্বর অংশটির স্রষ্টা স্বয়ং সুকুমার
অর্থাৎ প্রণেতার জায়গায় শুধু যোগীন্দ্রনাথ সরকার-এর নাম থাকলেও ‘হিজিবিজি’-র সহ-লেখক এক অর্থে সুকুমার রায়

অবশ্য এ ‘হ-য-ব-র-ল’ আমাদের পরিচিত রচনাটি নয় । ধাঁধা-সংগ্রহ ।

যাক সে কথা । আগে অল্প-চেনা বইয়ের পৃষ্ঠাগুলো উলটে দেখা যাক ।

১) বর্ণের ছড়া
সূচিপত্র অনুপস্থিত । ‘হিজিবিজি’-র প্রথম রচনা ‘বর্ণের ছড়া

‘অ - অজগর আসছে তেড়ে’ ইত্যাদি ছড়ার মাধ্যমে অক্ষর পরিচয় করানোর ক্ষেত্রে পথিকৃৎ যোগীন্দ্রনাথ
হাসি খুসি’-র সেই ধারা ‘হিজিবিজি’-তেও অব্যাহত

বর্ণের ছড়া’-য় প্রত্যেকটি বর্ণ এক-একটি মানুষ বা জন্তু ।
তাঁদের বিচিত্র কাজকর্মের প্রতি কিঞ্চিৎ ব্যঙ্গের কটাক্ষ হেনেছেন ছড়াকার ।
‘অ’, ‘আ’ অলস, নির্বোধ । ‘ই’ আমাদের মত অনর্গল ইংরেজি আওড়া
। ‘ঋ’, ‘ঌ’ সাধুবেশে পাকা চোর ।

বর্ণের ছড়া’-র সঙ্গেও কিন্তু সুকুমার-এর একটি পরোক্ষ সম্বন্ধ রয়েছে ।
‘সন্দেশ’, বৈশাখ ১৩২৩ সংখ্যায় প্রকাশিত হয় ‘বর্ণপরিচয় (স্বরবর্ণ)’ শীর্ষক ছড়া ।
কবির পরিচয় জানা যায় পরের মাসে । সেখানে ‘বর্ণপরিচয় (ব্যঞ্জনবর্ণ)’ শিরোনামের সঙ্গে ছিল যোগীন্দ্রনাথ সরকার-এর নাম ।
দুটি কিস্তিই অলংকৃত করেন পত্রিকা-সম্পাদক সুকুমার রায়
From the 'Blogus' blog.
বর্ণপরিচয় (ব্যঞ্জনবর্ণ)’,
যোগীন্দ্রনাথ সরকার,
‘সন্দেশ’, জ্যৈষ্ঠ ১৩২৩ ।
শিল্পী ।। সুকুমার রায়

বর্ণের ছড়া’ প্রকৃতপক্ষে ঐ দু’ভাগের ‘বর্ণপরিচয়’-এরই ঈষৎ বদলে-যাওয়া চেহারা
যেমন আদিরূপে ‘এ’, ‘ঐ’ প্রসঙ্গে ছিল “...মুখ শুকালো, ভয়েতে ঐ লুকায় পুকুর পাড়ে

হিজিবিজি’-তে পড়ি “...“ঐ যে রে চোর” যেই শুনেছে, লুকায় পুকুর-পাড়ে ।”
ব্যঞ্জনবর্ণের বেলায় পরিবর্তনগুলি ব্যাপকতর

‘সন্দেশ’-সংস্করণের স্বরবর্ণ-অংশের পাশে ‘বর্ণের ছড়া’-র প্রথম পৃষ্ঠাখানি রাখা হল
স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, সুকুমার-এর মূল অলংকরণগুলিকেই অনুসরণ করেছেন ‘হিজিবিজি’-র আঁকিয়ে ।
‘অ’ থেকে চন্দ্রবিন্দু অবধি বর্ণ-চরিত্রের ভঙ্গিমা উভয়ক্ষেত্রেই প্রায় হুবহু এক ।



From the 'Blogus' blog.
(বাঁদিকে) ‘বর্ণপরিচয় (স্বরবর্ণ)’, যোগীন্দ্রনাথ সরকার,
‘সন্দেশ’, বৈশাখ ১৩২৩ । শিল্পী ।। সুকুমার রায়
(ডানদিকে) ‘বর্ণের ছড়া’-র প্রথম পৃষ্ঠা, ‘হিজিবিজি’ ।
শিল্পী ।। অজ্ঞাত


২) সাবধান !
সাবধান !বললেই সুকুমার রায়-এর প্যালারাম বিশ্বাস -কে মনে পড়ে (‘সন্দেশ’, অগ্রহায়ণ ১৩২৩)
যোগীন সরকার-এর এই ছোট্ট ছড়াটি সম্পর্কে আশাপূর্ণা দেবী মন্তব্য করেছিলেন “সমাজতত্ত্বের কী স্পষ্ট ছবি !”

From the 'Blogus' blog.
সাবধান !’, ‘হিজিবিজি’ ।
শিল্পী ।। অজ্ঞাত




৩) তালপাতার সিপাই ; ৪) ইজি-চেয়ার
আগেই বলা হয়েছে, ‘হিজিবিজি’ গ্রন্থে ছবি ও ছড়ার যোগ অবিচ্ছেদ্য ।
রচনা # ৩-এ বেড়াল তাড়ানোর উদ্দেশ্যে দরজায় একটি ‘তালপাতার সিপাই’ স্থাপন করেছেন কথক ।
কিন্তু তাঁর পরিচয় কী ? চিত্রত্রয়ী অগ্রাহ্য করে কবিতাটি পাঠ করলে না-ও বোঝা যেতে পারে ।

কমিকসের বেলায় সংলাপে যা অকথিত থাকে, ধরা পড়ে চিত্রে

যোগীন্দ্রনাথ সরকার-এর অনেক ছড়াই এই ‘ছবিতে গল্প’ ধাঁচের ।
তিন স্তবক এবং তিনটি অলংকরণের মাধ্যমে ক্রমান্বয়ে এগিয়েছে ‘তালপাতার সিপাই’-এর কাহিনি ।
কমিকসের কায়দাতেই ।

From the 'Blogus' blog.
তালপাতার সিপাই’ ও ‘ইজি-চেয়ার’,
হিজিবিজি’ । শিল্পী ।। অজ্ঞাত


ছড়া # ৪ ‘ইজি-চেয়ার
আধুনিক কালের এক যোগীন্দ্র-অমনিবাসে অলংকরণ-শিল্পী আরামকেদারায় আসীন এক আয়েশি ভদ্রলোক-কে এঁকে দিয়ে কাজ সেরেছেন

ফলে ‘ইজি-চেয়ার’-এর মূল রহস্য অধরাই রয়ে গেছে ।
চেয়ার ও তার মালিকের প্রকৃত চেহারা জানবার জন্য ‘হিজিবিজি’-র আদি চিত্রখানির বিকল্প নেই ।


৫) কেমন হ’ত ! ; ৭) অদল-বদল ; ১৫) আজব চিড়িয়াখানা ;
৬) গঙ্গারামের খুড়ো
সুকুমার
-সৃষ্ট ষষ্ঠিচরণ  (‘পালোয়ান’) আসরে নামার মাস দুয়েক পরেই আবির্ভূত হন তাঁর এক হস্তী-লোফার প্রতিদ্বন্দ্বী ।
সরকার মশায়ের ‘কুস্তি-মহারাজ’  (‘তখন আর এখন’)

এক্ষেত্রে উভয়ের পদ্যদুটির পয়লা প্রকাশ জানা গেছে ।

তবে সর্বদা সেই তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি ।
কাজেই দুই কবির যেসব রচনায় বিষয়গত সাদৃশ্য বর্তমান, সেখানে কে কাকে প্রভাবিত করেছেন তা নির্ণয় করা কঠিন

এক জন্তুর অংশবিশেষ অপর একটির শরীরে আরোপিত ! পরিচিত পশুর রূপান্তর ।
হিজিবিজি’ বইয়ের ৫, ৭ ও ১৫ নম্বর ছড়াতে এমনটাই ঘটেছে

এই সূত্রে সুবিখ্যাত ‘খিচুড়ি
’ এবং ‘কিম্ভূত !’-এর নাম মনে পড়বেই
সুকুমার রায়-এর সেই কবিতাজোড়া প্রথম বেরয় ‘সন্দেশ’ পত্রিকায়, যথাক্রমে মাঘ ১৩২১ ও আশ্বিন ১৩২৫ সংখ্যায় ।

কিন্তু যোগীন্দ্রনাথ-এর ‘কেমন হ’ত !’, ‘অদল-বদল’ কিংবা ‘আজব চিড়িয়াখানা’ প্রথম কোন্ পত্রিকায় কবে ছাপা হয় ?
BlOGUS-বন্ধুরা কেউ জানালে ভাল লাগবে ।

খিচুড়ি’-তে মোরগের সঙ্গে জুড়েছিল গরু, টিয়ার সঙ্গে গিরগিটি ।
অদল-বদল’ ছড়ায় মোরগ ও টিয়ার অর্ধাংশ বসেছে কুকুর আর বেড়ালের দেহে ।

From the 'Blogus' blog.
অদল-বদল’,
হিজিবিজি’ । শিল্পী ।। অজ্ঞাত


আজব চিড়িয়াখানা’-তে অবশ্য পশুর চেনা বৈশিষ্ট্যকেই কল্পনায় নবরূপ দেওয়া হয়েছে ।
“কেউ কখনো দেখেনি যা” - তা প্রত্যক্ষ করার লক্ষ্যে ।
সিংহের কেশর বসেছে পিছনে । জিরাফের গলা উধাও ।

From the 'Blogus' blog.
আজব চিড়িয়াখানা’-র প্রথম পৃষ্ঠা,
হিজিবিজি’ । শিল্পী ।। অজ্ঞাত

কেমন হ’ত !’ ছড়াটির মত তার অলংকরণও ক্লাসিক ।
ছবির নিচে দক্ষিণ কোণে যেন পড়া যাচ্ছে চিত্রকরের নামের আদ্যাক্ষর
: P. G.
সম্ভবত পূর্ণচন্দ্র ঘোষ
বিমল ঘোষ (মৌমাছি) ‘কেমন হ’ত !’-র চিত্রটির বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে শেষে লিখেছেন
:
“হাসির সঙ্গে চমক – ভয়ের সঙ্গে মজা – তাই তো যোগীন্দ্রনাথ ছোটদের বন্ধু – শিশুমনের রাজা ।”

From the 'Blogus' blog.
কেমন হ’ত’ ও ‘গঙ্গারামের খুড়ো’,
হিজিবিজি’ । শিল্পী ।। পূর্ণচন্দ্র ঘোষ (?) এবং অজ্ঞাত

হিজিবিজি’-র ছড়া # ৬ ‘গঙ্গারামের খুড়ো’-র ক্ষেত্রে কিন্তু ছবির সঙ্গে লেখার সম্বন্ধ ক্ষীণ ।
চিত্রটি নিঃসন্দেহে ‘হাম্পটি ডাম্পটি’-র, পরে সুখলতা রাও-এর তর্জমায় যিনি ‘ডিম্বুরাম’

কিন্তু কেন তিনি পাঁচিলে উপবিষ্ট, কী পড়ছেন বা শোনাচ্ছেন, ‘গঙ্গারামের খুড়ো’-য় তার কোনো উত্তর নেই ।
ছড়া তথা নায়কের নামকরণের কারণও পরিষ্কার নয় ।


৮) সখের গাড়ী ; ৯) সাধের নৌকা ; ১৬) উল্টা বুঝলি রাম ! ; ১১) ভাগ্যে রক্ষে ; ১২) দোলনা
পূর্বোল্লিখিত হাল আমলের অমনিবাসে (দ্রষ্টব্য ‘ইজি-চেয়ার’) উপরের ছড়াগুলির সঙ্গে অলংকরণ গরহাজির ।
হিজিবিজি’-র মূল সংস্করণ খুললে তবেই ফাঁস হবে ‘সখের গাড়ী’ = শামুক , ‘সাধের নৌকা’ = ছাতা !
কিংবা ‘উল্টা বুঝলি রাম !’-এ নিয়ম ভেঙে অশ্বযুগল সওয়ার হয়েছেন বালক-চালিত ফিটনে

From the 'Blogus' blog.
সখের গাড়ী’ ও ‘সাধের নৌকা’,
হিজিবিজি’ । শিল্পী ।। অজ্ঞাত



ভয়ের সঙ্গে মজা মিশেছে ‘ভাগ্যে রক্ষে’ ছড়াতেও
এক মৎস্যশিকারি পড়েছেন কুমির আর চিতা-র মাঝখানে ১০ !
ছবিহীন ন্যাড়া স্তবক চতুষ্টয় পড়লে
কিন্তু রোমাঞ্চের কণামাত্র মিলবে না

ছড়া # ১২ প্রায় নির্ভুলভাবে স্মৃতি থেকে উদ্ধৃত করেছিলেন প্রবীণ অন্নদাশঙ্কর রায় ১১
সেই ‘দোলনা’-র স্বরূপ বুঝতে বইয়ের এই বিচিত্র চিত্রের শরণাপন্ন হতেই হবে ।

From the 'Blogus' blog.
দোলনা’,
হিজিবিজি’ । শিল্পী ।। অজ্ঞাত




১০) ছেলের চিঠি
ফড়িংবাবুর বিয়ে’ দিয়েছিলেন যোগীন্দ্রনাথ, ‘হাসি রাশি’ গ্রন্থে ।
হিজিবিজি’-র দশম ছড়া ‘ছেলের চিঠি’-তে আছে সোনা ব্যাঙের বিবাহের নিখুঁত বিবরণ । মেনুশুদ্ধ ।
ছেলে কটকটে কোন্ শ্রেণির জীব, পদ্যেই তা প্রকাশিত ।
কিন্তু ভেক-বরযাত্রীগণের অভিনব উভচর নৌকাটিকে চিনে নেওয়ার একমাত্র চাবিকাঠি হল অলংকরণ ।
দু’পৃষ্ঠার ছড়া । প্রথমটির প্রতিলিপি রইল ।
From the 'Blogus' blog.

ছেলের চিঠি’-র প্রথম পৃষ্ঠা,
হিজিবিজি’ । শিল্পী ।। অজ্ঞাত



১৩) চিৎপটাং
স্পীচ-বাবল নেই । কিন্তু পুরোটাই শেয়াল ও হাঁসের কথোপকথন ।
তালপাতার সিপাই’-এর মত ছড়া # ১৩-কেও কি কমিক-স্ট্রিপ বললে ভুল হয় ?
নিজেরাই বিচার করুন ।
প্রসঙ্গত, ‘হাসি রাশি’-তে ‘চিৎপটাং’ নামে একটি সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র কবিতা রয়েছে ।

From the 'Blogus' blog.
চিৎপটাং’,
হিজিবিজি’ । শিল্পী ।। অজ্ঞাত




১৪) বাপরে বাপ্ ; ২০) নাক ! – সাবধান !
অকারণে গাছ কাটার ফলে বনদেবীর শাপ । অপরাধীদ্বয় ধাপে ধাপে পরিণত হন বৃক্ষে ।
মজার তুলনায় ‘বাপরে বাপ্’-এ যেন ভয়ানক রসের প্রাধান্য ।

From the 'Blogus' blog.
বাপরে বাপ্’-এর প্রথম পৃষ্ঠা,
হিজিবিজি’ । শিল্পী ।। অজ্ঞাত



নাক ! – সাবধান !’ ছড়ায় তেমনি, খাঁদা নাক দেখে হাসবার পাপে গদাই-এর নাসিকা তেরো হাত লম্বা হয়ে যায় ।
একেবারে মিথ্যাবাদী পিনোকিয়ো-র দশা !
সুকুমার রায়-এর ‘অসম্ভব নয় !’-তেও (‘সন্দেশ’, ফাল্গুন ১৩২৪) ছিলেন এক দীর্ঘনাসা সাহেব ।
সে তাঁর স্বাভাবিক ‘বাহার’ । কোনো অপরাধের সাজা নয় ।

From the 'Blogus' blog.
নাক ! – সাবধান !’,
হিজিবিজি’ । শিল্পী ।। অজ্ঞাত



নানান লেখায় মানুষ, জীবজন্তু বা প্রকৃতির প্রতি সদয় হওয়ার শিক্ষা দিয়েছিলেন যোগীন সরকার

না মানলে ‘পাপী’-র উপর নেমে আসত দুঃস্বপ্নের মত নির্মম গুরুদণ্ড ।
বাপরে বাপ্’ কিংবা ‘নাক ! – সাবধান !’ সেই ধাঁচের ছড়া ।


১৭) ঘোড়ার ডিম
আপাত-চমকপ্রদ আবিষ্কার – যা পরে অলীক প্রমাণিত হয়
:মেয়ার’স নেস্ট’ শব্দযুগলের একটি অর্থ নাকি এমনটাই ।
কিন্তু ডিম্ব-সহ অশ্ব-নীড় নেহাতই কল্পনা নয়, সচিত্র
ঘোড়ার ডিমএমনটাই সাব্যস্ত করে ।
লীলা মজুমদার-এর ভাষায় “কবিতার কথায় যদি বা কারো প্রত্যয় না হয়, ছবি দেখলে মন থেকে সব অবিশ্বাস ঘুচে যেতে বাধ্য । ... এ ছবি কে এঁকেছিলেন জানি না, তবে কবির সঙ্গে তিনিও স্বচ্ছন্দে অমরত্ব দাবী করতে পারেন
১২

From the 'Blogus' blog.
ঘোড়ার ডিম’,
হিজিবিজি’ । শিল্পী ।। অজ্ঞাত




২১) বিয়ে-পাগলা
আজকে যে-বিষয় বা রসিকতা নিতান্ত নিরীহ, পরশু তা অতি সংবেদনশীল গণ্য হতে পারে ।
কিশোর-মনের পক্ষে কোনটা উপযোগী, যুগের সঙ্গে তার ধারণা পালটাতে বাধ্য ।
হাসি খুসি’ দ্বিতীয় ভাগ-এ (১৯০৪) বৃদ্ধ ‘সার্কাসের বাঘ’-কে বশ করা হয় তার গায়ে জ্বলন্ত তুবড়ির ফুলকি ছুঁড়ে ।
হারাধন-এর ছেলের দল এক চোর-কে দস্তুরমত গণপ্রহার করে তাঁর কান কেটে নেয় ।
হাসি রাশি’-র ‘ঘুমের ওষুধ’ ছড়ায় মজার আড়ালে বর্ণবৈষম্যের গন্ধ ।

অনুরূপভাবে, শুধু বড়দের প্রহসনে নয় ১৩ , ছোটদের ছড়াতেও ‘বিয়ে-পাগলা’ হয়েছেন নিষ্ঠুর ঠাট্টার পাত্র

হিজিবিজি’ পুস্তকের এই অন্তিম তথা ২১ নম্বর রচনা কি আজও আদৌ শিশুপাঠ্য ?
কবিতাটি চার পৃষ্ঠার
প্রথমটি প্রদর্শিত হল ।

From the 'Blogus' blog.
বিয়ে-পাগলা’-র প্রথম পৃষ্ঠা,
হিজিবিজি’ । শিল্পী ।। অজ্ঞাত




১৮) গোলক ধাঁধা ; ১৯) হ-য-ব-র-ল (স্বর্গীয় সুকুমার রায় চৌধুরী লিখিত)
হিজিবিজি’-র তিনটি পৃষ্ঠা সম্পূর্ণভাবে ধাঁধার প্রতি নিবেদিত ।
গোলক ধাঁধা’-র অপ্রচলিত বিচিত্র আকার, ঐ অংশটিকে আরও আকর্ষণীয়, কৌতূহলোদ্দীপক করে তুলেছে ।

From the 'Blogus' blog.
গোলক ধাঁধা’,
হিজিবিজি’ । শিল্পী ।। অজ্ঞাত



এরপর জোড়া পৃষ্ঠার ‘হ-য-ব-র-ল’ শীর্ষক ধাঁধা

‘সন্দেশ’ পত্রিকায় সুকুমার-প্রণীত ধারাবাহিক উপন্যাস ‘হ-য-ব-র-ল’ শুরু হয় জ্যৈষ্ঠ ১৩২৯ থেকে । অর্থাৎ ১৯২২ ।
হিজিবিজি’-র প্রথম এডিশন ১৯১৬ সালে বেরয় ।
এমন হতে পারে, বইতে ‘হ-য-ব-র-ল’ ধাঁধার অংশটি ১৯২২ বা ১৯২৩ (রায় মহাশয়ের প্রয়াণের সাল)-পরবর্তী সংযোজন ।
উপন্যাসের জনপ্রিয়তার কথা মাথায় রেখেই সম্ভবত এই বিভাগের নামকরণ

যদিশিরোনামটুকু ভিন্ন সমনামী কাহিনির সঙ্গে ‘হিজিবিজি’-র ধাঁধার কোনো সম্পর্ক নেই ।

BlOGUS-এর হাতে এসেছে ‘হিজিবিজি’ গ্রন্থের ১৮ শ সংস্করণ ।
সাল অজানা হলেও সুকুমার রায় অবশ্যই তার অনেক আগে প্রয়াত ।
স্বভাবতই আলোচ্য অংশে স্রষ্টার নামের পূর্বে বসেছে ‘স্বর্গীয়’ ।

হিজিবিজি’-র ‘হ-য-ব-র-ল’-তে পাঁচটি মজাদার খেলা বা ধাঁধা ।
পৃষ্ঠা দুটি আগে সাজিয়ে ফেলা যাক
:

From the 'Blogus' blog.
হ-য-ব-র-ল,
হিজিবিজি
ধাঁধা-সৃজন ও শিল্পী ।। সুকুমার রায়



প্রথম ছবিটি আপাতদৃষ্টিতে খাঁচার
খুঁটিয়ে দেখলে কিন্তু ধরা পড়বেন পিঞ্জরাবদ্ধ ‘সিঙ্গিমামা’ ।
স্রেফ রেখার ঘনত্বের হেরফের ঘটিয়ে এক আশ্চর্য দৃষ্টি বিভ্রম !
সঙ্গে দু’লাইনের ছোট্ট ছড়া । সুকুমার-এরই রচনা ?

এর পর ‘পড় ত কি লিখেছে ?
বাঁকাচোরা নানা ছাঁদের লাইনের মধ্যে থেকে উৎসাহী পাঠক ঠিক আবিষ্কার করে ফেলবেন ‘হিজিবিজি লেখা’ ।
একই ধরনের একটি ধাঁধা প্রকাশিত হয়েছিল ‘সন্দেশ’-এর আশ্বিন ১৩২৩ সংখ্যায় । ‘এটা পড় দেখি
!’ শিরোনামে :
From the 'Blogus' blog.
এটা পড় দেখি !’ (ধাঁধা),
‘সন্দেশ’, আশ্বিন ১৩২৩ ।

BlOGUS-বন্ধু পড়তে পারলেন তো ?

পরবর্তী খেলা দুটিও ‘সন্দেশ’ থেকে গৃহীত ।
বই উলটে ধরলেই ছবি
ছাগল বদলে যায় মানুষে ।
‘সন্দেশ’, আশ্বিন ১৩২৩-এ চিত্রের নিচে-উপরে লেখা হয় ‘এক যে ছিল ছাগল’ ও ‘তার মনিবটি এক পাগল’
:

From the 'Blogus' blog.
এক যে ছিল ছাগল’,
‘সন্দেশ’, আশ্বিন ১৩২৩ ।


দেখাই যাচ্ছে, ‘হিজিবিজি’-তে এসে সুকুমার ছড়াটিকে ঢেলে সাজান -
“লং সাহেবের পাগলা ছাগল মেজাজ বড় চটা,
যেমন তাহার শিঙের বাহার, তেমনি দাড়ির ঘটা !
মনিবটি তার ব্যস্তবাগীশ, জালার মত দেহ,
আসলে পরে এদিক্ পানে, চটিয়ো না ক কেহ ।”

‘ভারী গম্ভীর’-এর উলটোদিকে ‘বেজায় স্ফুর্ত্তি’ ।
‘সন্দেশ’ পত্রিকার কার্তিক ১৩২২ সংখ্যার ‘নূতন ধাঁধা’-টি ছিল এইরকম
:

From the 'Blogus' blog.
নূতন ধাঁধা’,
‘সন্দেশ’, কার্তিক ১৩২২ ।

তার ‘হিজিবিজি’-সংস্করণে যুক্ত হল -
“মুখটি যেন তেলের হাঁড়ি -
কার সাথে করেছে আড়ি ?
উল্টে দেখি স্ফুর্ত্তিভরে
মুখের হাসি উথলে পড়ে !”

হ-য-ব-র-ল’ বিভাগের পঞ্চম ধাঁধায় আবার দৃষ্টি বিভ্রম - এবারে নানারকম বিন্দুর সাহায্যে ।
একটু দূর থেকে দেখলেই ফুটে উঠবে একটি ছেলের মুখ ।
এক্ষেত্রেও ছোট্ট একটি পদ্যের মাধ্যমে ‘ফুটকি’-র মজা বুঝিয়ে দেওয়া হয় ।

সুকুমার রায়-এর কোনো রচনাসংগ্রহে ‘হিজিবিজি’ বইয়ের এই সচিত্র ‘হ-য-ব-র-ল’ অংশ নজরে আসেনি ।
বিচ্ছিন্নভাবে হয়ত ছাগল-মনিব কিংবা বদমেজাজি-খোশমেজাজি ছবিদুটি সংকলিত হয়েছে ।
কিন্তু তা ‘সন্দেশ’ থেকে । ‘হিজিবিজি’-র জন্য নতুন করে লেখা আনুষঙ্গিক ছড়াগুলি সেখানে নেই ।


অবশেষে : হিজিবিজি’-র প্রচ্ছদ !
সুকুমার রায় এমন একজন স্রষ্টা, যাঁর ছোট-বড় যে-কোনো অনাবিষ্কৃত লেখা বা চিত্র আমাদের কাছে অমূল্য ।
অথচ মৃত্যুর নয় দশক বাদেও তাঁর আঁকা যাবতীয় প্রচ্ছদ, ইলাস্ট্রেশন, পেন্টিং একত্রিত করে অ্যালবাম প্রকাশিত হল না ।

যোগীন্দ্রনাথ সরকার
-এর ‘হিজিবিজি

বইখানির মলাট দেখলেই একটু থমকে যেতে হয় ।
এ অঙ্কনশৈলী, ঐ ভঙ্গি যে বড্ড পরিচিত ।
আমাদের পরম বন্ধু হিজি বিজ্ বিজ্-এর গড়াগড়ি-দেওয়া প্রতিকৃতি মনে পড়ে ?
এ যেন তারই দাঁড়ানো সংস্করণ ।
সন্দেহ বাড়িয়ে দেয় ‘হিজিবিজি’-র প্রচ্ছদের নিচের বাঁ কোণের স্বাক্ষর ।
S.R.?!

From the 'Blogus' blog.
হিজিবিজি’ গ্রন্থের
প্রচ্ছদ-স্রষ্টার অস্পষ্ট স্বাক্ষর ।



নিজের বই ছাড়া সীতা দেবী-র ‘নিরেট গুরুর কাহিনী ও অন্যান্য১৪ ইত্যাদি কিছু গ্রন্থের মলাট এঁকেছিলেন সুকুমার
এই খবরটুকু জানা ছিল । কিন্তু ‘হিজিবিজি’ ? নাঃ !

তবে
BlOGUS নিতান্তই বোগাস ব্লগ ।
নামের
আদ্যাক্ষর ‘S.R.’ (?) এবং স্টাইল চেনা-চেনা লাগলেই যে শিল্পী সুকুমার-ই হবেন, এমন তো নয় ।
বিশেষজ্ঞরা এ-বিষয়ে আলোকপাত করবেন কি ?

যোগীন্দ্রনাথ সরকার (এবং সুকুমার রায়) -এর ‘হিজিবিজি’ বইয়ের প্রচ্ছদ সাজিয়ে দিয়ে পাততাড়ি গোটাচ্ছে
BlOGUS

From the 'Blogus' blog.
যোগীন্দ্রনাথ সরকার-এর ‘হিজিবিজি’ ।
প্রচ্ছদ শিল্পী ।। সুকুমার রায় (?) ।



------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------- 

= ‘সন্দেশ’ শ্রাবণ ১৩৩০ সংখ্যায় ছাপা হয় সুকুমার-অঙ্কিত ‘“এক্কাগাড়ী খুব ছুটেছে” -’ ।
পরের মাসেই তিনি প্রয়াত হন ।
এই সনে যোগীন্দ্রনাথ সরকার আক্রান্ত হন
পক্ষাঘাতে  

= ‘উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী : গ্রন্থপঞ্জী’, দেবাশিস মুখোপাধ্যায়, ‘কোরক সাহিত্য পত্রিকা’, উপেন্দ্রকিশোর সংখ্যা, বইমেলা ২০০৫ । 

= ‘সুকুমার রায় : জীবনকথা’, হেমন্তকুমার আঢ্য, পাইওনিয়ার পাবলিশার্স, ১৩৯৭ । 

= ‘খেয়াল খুসির খেলা’, আশাপূর্ণা দেবী,
‘যোগীন্দ্রনাথ সরকার শতবার্ষিকী স্মরণী’, সম্পাদক
: শ্রীহরি গঙ্গোপাধ্যায়, প্রাপ্তিস্থান : সিটি বুক সোসাইটি, ডিসেম্বর ১৯৫৪ । 

= সুকুমার রায়-এর ‘পালোয়ান’, ‘সন্দেশ’, ভাদ্র ১৩৩০ ; যোগীন্দ্রনাথ সরকার-এর ‘তখন আর এখন’, ‘সন্দেশ’, কার্ত্তিক ১৩৩০ ।
ছড়া ও ছবি’ বইতে সংকলিত ‘তখন আর এখন’-এর নায়কের নতুন নাম ‘মল্ল মহারাজ’  


= দুই কবির লিখনশৈলীতেও প্রায়ই মিল চোখে পড়ে ।
যোগীন্দ্রনাথ
-এর ‘খেলার গান’-এ (সাল অজানা) স্থান পেয়েছিল ‘কাজের লোক

বইটির অন্যান্য ছড়ার মত এটিও একাধিক চরিত্রের সংলাপ তথা নাটিকার আকারে বিন্যস্ত ।
কিন্তু ‘কাজের লোক’ প্রকৃতপক্ষে সুকুমার রায়-এর রচনা । ‘সন্দেশ’-এ (মাঘ ১৩২৩) প্রকাশিত হওয়ার সময় অবশ্য কবির নাম উল্লিখিত হয়নি ।
খেলার গান’ গ্রন্থেও তা অনুপস্থিত । কবিতার শেষে শুধু ছাপা আছে ‘- সন্দেশ’ ।
এই বিভ্রান্তির কারণে সরকার মহাশয়ের ‘শিশুপাঠ্য গ্রন্থাবলী’-তে (শৈব্যা প্রকাশন বিভাগ, ১৯৯৩ ?) যোগীন্দ্রনাথ-এরই সৃষ্টি হিসাবে সংকলিত হয়েছে ‘কাজের লোক

প্রসঙ্গত, যোগীন্দ্রনাথ সরকার সম্পাদিত ‘গল্প-সঞ্চয়’ গ্রন্থে (১৯৩৬) কিন্তু প্রকৃত লেখকের নামোল্লেখ করেই রাখা হয়েছিল সুকুমার-এর ‘অবাক্ জলপান’ নাটিকা ।

= ‘স্টেটসম্যান’-এ কর্মরত আর্টিস্ট পি
. ঘোষ সম্পর্কে খগেন্দ্রনাথ মিত্র লেখেন “প্রধানত যোগীন্দ্রনাথ সরকার মহাশয়ের গ্রন্থাবলির চিত্রশিল্পকার ছিলেন তিনি
(‘শতাব্দীর শিশু-সাহিত্য’, পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি, আকাদেমি সংস্করণ
: ২৬ নভেম্বর ১৯৯৯ ।)

= ‘তোমাদের বন্ধু যোগীন্দ্রনাথ’, বিমল ঘোষ (মৌমাছি),
‘যোগীন্দ্রনাথ সরকার শতবার্ষিকী স্মরণী’, সম্পাদক
: শ্রীহরি গঙ্গোপাধ্যায়, প্রাপ্তিস্থান : সিটি বুক সোসাইটি, ডিসেম্বর ১৯৫৪ ।
নিবন্ধটি সম্ভবত ‘আনন্দবাজার পত্রিকা’-র ‘আনন্দমেলা’ বিভাগে প্রথম বেরয় ।
 

= যোগীন্দ্রনাথ সরকার রচিত ‘ছড়া ও পড়া’ (১৯২১) গ্রন্থে খোকার উভচর কলের গাড়ী’ ছিল একটি কচ্ছপ ।
সেখানেও ছবি না দেখে, শুধু ছড়াটি পাঠ করে তা অনুমান করা মুস্কিল ।
 

১০ = ‘হাসি ও খেলা’ (১৮৯১) সংকলনের ‘কেমন জব্দ’ গল্পের কাঠুরেও পড়েন অনুরূপ পরিস্থিতিতে । 

১১ = ‘যোগীন্দ্রনাথ সরকার’, অন্নদাশঙ্কর রায়,
‘যোগীন্দ্রনাথ সরকার শতবার্ষিকী স্মরণী’, সম্পাদক
: শ্রীহরি গঙ্গোপাধ্যায়, প্রাপ্তিস্থান : সিটি বুক সোসাইটি, ডিসেম্বর ১৯৫৪  

১২ = ‘যোগীন্দ্রনাথ সরকার’, লীলা মজুমদার,
‘যোগীন্দ্রনাথ সরকার শতবার্ষিকী স্মরণী’, সম্পাদক
: শ্রীহরি গঙ্গোপাধ্যায়, প্রাপ্তিস্থান : সিটি বুক সোসাইটি, ডিসেম্বর ১৯৫৪
ঘোড়ার ডিম’ পদ্যটি ‘খুকুমণির ছড়া’ (১৮৯৯) সংকলনের অন্তর্গত – ভ্রমক্রমে এমন মন্তব্য করেন লীলা মজুমদার এবং তদনুসরণে পরবর্তী বহু নিবন্ধকার ।
বলাই বাহুল্য, ‘খুকুমণির ছড়া’ নয়, ‘ঘোড়ার ডিম’ রয়েছে ‘হিজিবিজি’-তে ।
 

১৩ = দীনবন্ধু মিত্র (১৮৩০ - ১৮৭৩) রচিত প্রহসন ‘বিয়ে পাগলা বুড়ো’ (১৮৬৬)  

১৪ = গল্পটির অলংকরণ উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী-র হলেও পুস্তকের প্রচ্ছদখানি সুকুমার-কৃত
  


12 comments:

Arnab said...

One of the best post till date, Sukumar Roy r ekhono kichu lekha anka baire, durdanto khoj! Aar Bapre Bap kobita ta amai Sukumar Roy r ekta kobitar kotha mone koriye dei!

Unknown said...

অসাধারণ পরিশ্রমের কাজ। অনেক অজানা তথ্য জানা গেল। অসংখ‍্য ধন্যবাদ। তবে এটি মুদ্রিত আকারে পেলে ভালো হত। অনেকের কাজে লাগত।

Unknown said...

তোমায় ধন্যবাদ জানাবার ভাষা পাচ্ছি না অর্ণব ।
Blogus-এর স্বল্পসংখ্যক উৎসাহদাতাদের মধ্যে তুমিই অগ্রগণ্য ।

Unknown said...

অশেষ ধন্যবাদ সম্রাট বাবু ।
তবে Blogus-এর যাবতীয় পোস্ট আতি বোগাস, অগভীর, ভ্রান্তিতে ঠাসা !
এ-বস্তু বোধহয় ছাপা না হলেই শ্রেয় ...

sankha goswami said...

sadhu sadhu.asadharon post. ekta asamparkito katha mone porlo. jogindranather bone jngolete ekta galpo ache nandider singha shikar. bone jongolete( amar kache shaibya sanskaran chara kichu nei) etir utsa sandesh bole chinhito. mojar bepar upendrakishor rachanaboli, sukumar rachanaboli, jogindranath omnibus provriti pratiti granthe amra ei lekhati pai.bloguser pathakder anurodh joginranather sisusahitya sanjoger antaranga chobi pate hole khagendranath mitrer jader lekha tomra poro rochonati pore dekhun. siosusahityabhagirath jogindranath ityadi boiguli pathito holeo khagendranather ei lekhati teman kadar pay na . kintu eti oti mulyaban

Unknown said...

বাঃ ! আপনি অনেক নতুন তথ্য দিয়ে আমাদের সমৃদ্ধ করলেন ।
ধন্যবাদ প্রীতম বাবু ।
পুরনো রামধনু-র পৃষ্ঠায় 'যাঁদের লেখা তোমরা পড়ো' ধারাবাহিকটির সন্ধান পেলেও, গ্রন্থ-রূপে এটিকে কখনো দেখিনি ।
বই হিসাবে কি এখনো পাওয়া যায় ?

Riddhi said...

Asadharan kaj korechen apni. Erakom ajana jinis aro khuje ber kore amader samiddho korun. Bhalo thakben.
Riddhi Goswami

sankha goswami said...

asia publishing companyr khagendranath mitra omnibuse purotai paben

Unknown said...

অশেষ ধন্যবাদ ঋদ্ধি বাবু ।
আপনার ভাললাগার কথা জেনে উৎসাহিত বোধ করছি ।
ভাল থাকবেন ।

Unknown said...

এই তথ্যের জন্য আবারো ধন্যবাদ জানাই ।
ভাল থাকবেন ।

Debajyoti Guha said...

uff korechen ki!!! kotha theke pelen? durdanto khobor janlam

Unknown said...

অশেষ ধন্যবাদ দেবজ্যোতি বাবু !
সুকুমার রায়-এর এমন কত অগ্রন্থিত ছবি / লেখা হয়তো লুকিয়ে আছে ।
বিশেষত অন্য লেখকদের জন্য করা ওঁর অলংকরণগুলি যদি কখনো সংকলিত হয় ...