শারদ শিবরাম (১৯৪০ – ১৯৫১)
== এই ব্লগে প্রদর্শিত অপরের রচনাংশ, স্থিরচিত্র বা
অলংকরণের কপিরাইট আমাদের নয় । ==
পোস্টের
বক্তব্য স্পষ্টতর করতে এগুলি সাজানো হচ্ছে । কোনও ব্যবসায়িক স্বার্থে নয় ।
শিবরাম চক্রবর্তী (১৯০৩ – ১৯৮০) ও দেব সাহিত্য কুটীর পূজাবার্ষিকী । |
********************************************************************************
সুদুর্লভ বই ও
বার্ষিকীর অলংকরণ এবং সেই সংক্রান্ত তথ্যাদি সংগ্রহ করে দিয়ে নিঃস্বার্থে সাহায্য করেছেন
শ্রী দেবাশিস
গুপ্ত, শ্রী কুন্তল মণ্ডল, শ্রী সমুদ্র বসু, শ্রী ইন্দ্রনাথ
বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্রী প্রণব ভট্টাচার্য, শ্রী সোমনাথ দাশগুপ্ত ।
এঁরা সকলেই ব্যস্ত মানুষ ।
তবু যে এই অকিঞ্চিৎকর প্রয়াসের জন্য সময় ও শ্রম ব্যয় করতে কুণ্ঠিত হননি, তার মূলে এঁদের সংরক্ষণ-সদিচ্ছা এবং শিবরাম-প্রীতি ।
এঁরা সকলেই ব্যস্ত মানুষ ।
তবু যে এই অকিঞ্চিৎকর প্রয়াসের জন্য সময় ও শ্রম ব্যয় করতে কুণ্ঠিত হননি, তার মূলে এঁদের সংরক্ষণ-সদিচ্ছা এবং শিবরাম-প্রীতি ।
BlOGUS সবিশেষ কৃতজ্ঞ ।
********************************************************************************
১৯৩১
(১৩৩৮) থেকে দেব সাহিত্য কুটীর-এর সুদৃশ্য শারদ সংকলনসমূহ প্রকাশের
সূচনা ।
১৯৩৬-এর ‘শিশু গল্পিকা’-য় একটি গল্প ছিল শিবরাম
চক্রবর্তী-র । কিন্তু বার্ষিকীর পরবর্তী কোনো সংস্করণ থেকে তা বাদ পড়ে
।
লেখক-লিস্টে তাঁর নাম নিয়মিতভাবে যুক্ত
হল ১৯৪০ সালে ।
পরের চার দশক ধরে, ‘হাসির গল্প’
অংশে তিনিই ছিলেন অন্যতম আকর্ষণ ।
বিশ্লেষণ
নয় । গবেষণা নয় । স্রেফ সচিত্র ন্যাড়া তালিকা ।
-------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
১)
সাল : ১৯৪০ (১৩৪৭)
সাল : ১৯৪০ (১৩৪৭)
শারদীয়া : মায়া-মুকুর
সম্পাদক : প্রেমেন্দ্র মিত্র
শিবরাম-কাহিনি : আস্তে আস্তে
ভাঙো !
দেব সাহিত্য কুটীর বার্ষিকী ‘মায়া-মুকুর’ (১৯৪০) । |
‘মায়া-মুকুর’ (১৯৪০)-এ প্রকাশিত ‘আস্তে আস্তে ভাঙো !’ |
বন্ধুবর প্রেমেন্দ্র মিত্র-র সম্পাদিত ‘মায়া-মুকুর’ বার্ষিকীর সূত্রে দেব সাহিত্য কুটীর-এ নিয়মিত অতিথি হলেন শিবরাম চক্রবর্তী ।
প্রতুল চন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়
(১৯০৩ – ১৯৭৪)-এর মজার অলংকরণ সহ বেরল ‘আস্তে আস্তে ভাঙো !’
পরবর্তী
বেশ কয়েকটি শারদীয়ায়, এই শিল্পীই চিত্রিত করেছেন চক্রবর্তী-র
কত চমৎকার গল্প ।
শিল্পী প্রতুল চন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় (১৯০৩ – ১৯৭৪) । |
দেব সাহিত্য কুটীর থেকে শিবরাম-এর একাধিক একক সংকলন প্রকাশিত হয় ।
প্রথমটিই
বোধহয় ‘উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে’ (১৯৪২ ?) ।
এই
গ্রন্থের
‘আস্তে আস্তে ভাঙো !’-র সঙ্গে ‘মায়া-মুকুর’ সংস্করণের একটি
বড় তফাৎ :
কাহিনির
অন্তে চার্লস চ্যাপলিন-এর পরিবর্তে, ডিয়্যানা ডার্বিন-এর ফিল্ম
দেখার উদ্যোগ করেন দুঃসংবাদ-দাতা ও গ্রহীতা ।
‘ক্ষান্তমাসি’ বা ‘খবরদারি সহজ নয়’ নামেও কিঞ্চিৎ ভিন্ন চেহারায় যা লভ্য ।
-------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
২)
সাল : ১৯৪১ (১৩৪৮)
শারদীয়া : সোনালী ফসল
সম্পাদক : সৌরীন্দ্রমোহন মুখোপাধ্যায়
শিবরাম-কাহিনি : হাওড়া-আমতা রেল
লাইনে দুর্ঘটনা !
‘সোনালী ফসল’ (১৯৪১)-এ প্রকাশিত ‘হাওড়া-আমতা রেল লাইনে দুর্ঘটনা !’
|
আমতা-আমতা
না করেই বলি, এই গল্পখানি ঘিরে ঘটে গেল এক দুর্ঘটনা ১ ।
‘শনিবারের চিঠি’-র পৌষ ১৩৪৮সংখ্যায় ‘সংবাদ-সাহিত্য’ বিভাগে লেখা হল :
‘শনিবারের চিঠি’-র পৌষ ১৩৪৮সংখ্যার ‘সংবাদ-সাহিত্য’ বিভাগ থেকে । |
বিদেশি উৎসের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে
শিবরাম চক্রবর্তী-র উত্তর পাওয়া গেল
ফাল্গুন ১৩৪৮ সংখ্যায় :
শিবরাম চক্রবর্তী-র উত্তর, ‘শনিবারের চিঠি’-র ফাল্গুন ১৩৪৮ । |
‘দাদু
নাতির দৌড়’, গ্রন্থম (১৩৬৯) ।
প্রচ্ছদ : শৈল চক্রবর্তী ।
|
গ্রন্থাকারে প্রকাশিত শিবরাম-এর বহু ‘উপন্যাস’-ই, খণ্ড-খণ্ড স্বয়ংসম্পূর্ণ ঘটনা দ্বারা আলগাভাবে জোড়া ।
মগন
পাঠকমাত্রেই দেখবেন, ঐ একটি ভেঙে পাঁচটি হয় । বিপরীতও সত্য ।
ধরুন
‘দাদু নাতির দৌড়’ গ্রন্থ ২ ।
এই উপন্যাসের অন্তিম খণ্ডাংশ, স্রেফ ‘হাওড়া-আমতা রেল লাইনে দুর্ঘটনা !’
শুধু
ছোটগল্পের অনামা বাবা-ছেলে, বইতে হয়ে গেছেন দাদু ঘনশ্যাম আর নাতি
টুসি ।
-------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
৩)
সাল : ১৯৪২ (১৩৪৯)
শারদীয়া : মধু-মেলা
সম্পাদক : বুদ্ধদেব বসু শিবরাম-কাহিনি : পড়শীর টান !
‘পড়শীর টান !’, ‘মধু-মেলা’ (১৯৪২) । |
এই
গল্পে, কথক-এর বোন বিনি উপস্থিত । কাজেই নামহীন ন্যারেটর-কে খোদ শিবরাম ধরে
নেওয়া যায় ।
প্রতুল বন্দ্যোপাধ্যায়-এর অলংকরণে অবশ্য এক
পাকানো গোঁফ প্রৌঢ়কে দেখা গেছে ।
‘পড়শীর টান’ ৩ নামেই
একটি সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র বড়দের কাহিনিও লিখেছিলেন শিবরাম চক্রবর্তী ।
-------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
৪)
সাল : ১৯৪৩ (১৩৫০)
শারদীয়া : রূপ-রেখা
সম্পাদক : নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায়
শিবরাম-কাহিনি : মাস্তুতো ভাই !
শিবরাম-কাহিনি : মাস্তুতো ভাই !
‘মাস্তুতো ভাই !’, ‘রূপ-রেখা’ (১৯৪৩) । |
হেডপীসে
এবার চশমা-শোভিত শিবরাম-কথক ।
কাহিনি-কেন্দ্রে
লেখক -এর ‘মাস্তুতো ভাই’ ।
অপর একটি গল্পে আছেন হর্ষবর্ধন-এর ‘মাসতুতো ভাই’ ৪ ।
অপর একটি গল্পে আছেন হর্ষবর্ধন-এর ‘মাসতুতো ভাই’ ৪ ।
দুটি আলাদা গল্প । একই শিরোনাম । শুধু বানানের
তফাৎ ।
-------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
৫)
সাল : ১৯৪৪ (১৩৫১)
শারদীয়া : বর্ষ-মঙ্গল
সম্পাদক : শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়
শিবরাম-কাহিনি : অশ্ব থেকে অশ্বতর !
‘অশ্ব থেকে অশ্বতর !’, ‘বর্ষ-মঙ্গল’ (১৯৪৪) । |
অশ্বারোহণ
ও অধঃপতন । এই বিষয়ে শিবরাম রচিত একাধিক ঘোড়েল গল্পের একটি ।
অবশ্য ‘ঘোড়ার সঙ্গে ঘোরাঘুরি’ ৫
কিংবা ‘ঘোড়ায় চড়ার ব্যায়াম’ ৬ বোধহয় বেশি পরিচিত ।
‘অশ্ব থেকে অশ্বতর !’-র ড্রিলমাস্টার রণদুর্ম্মদ বড়ুয়া উপস্থিত ‘জুতোর
মতো অখাদ্য নেই’ ৭ কাহিনিতেও ।
-------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
৬)
সাল : ১৯৪৫ (১৩৫২)
শারদীয়া : আলপনা
শিবরাম-কাহিনি : চটির সঙ্গে চটাচটি
‘চটির সঙ্গে চটাচটি’, ‘আলপনা’ (১৯৪৫) । |
এই
কাহিনির সঙ্গে, শিবরাম চক্রবর্তী-র
পূর্বপ্রকাশিত ‘জীমূতবাহনের জুতো’ ৮ -র মিল আছে ।
সেই গল্পের প্লটখানি আবার ধ্রুবেশ চন্দ্র
অধিকারী (গৌরাঙ্গ প্রসাদ বসু ?)-র কাছ থেকে পান লেখক ।
‘আমার ভূত দেখা’ ৯
গ্রন্থে মিলবে এই স্বীকৃতি ।
‘আলপনা’ বার্ষিকীতেই ঘনাদা ১০ -র সঙ্গে আলাপনের পয়লা সুযোগ পান পাঠক ।
প্রেমেন্দ্র
মিত্র-র সেই ‘মশা’ যতটা বিখ্যাত, ‘চটির সঙ্গে চটাচটি’-ও তাই ।
শরৎচন্দ্র
চট্টোপাধ্যায় (১৮৭৬ – ১৯৩৮) । |
চক্রবর্তী-র ব্যক্তিগত চটাচটির মাঝে, গল্পে এসেছে এক চট্টোপাধ্যায়-এর উপ-কিসসা ।
সেই তিনি, ‘দেনা-পাওনা’-র নাট্যরূপ ‘ষোড়শী’-কে
ঘিরে, যাঁর সঙ্গে শিবরাম-এর সম্পর্ক প্রায় আদালতের দোরে পৌঁছয় ।
স্বয়ং শরৎচন্দ্র ।
সন্ধি-ভেদাভেদ
বিস্মৃত হয়েই যেন শিবরাম নানা গল্পে শরৎ-প্রসঙ্গ আনেন ।
‘শরচ্চন্দ্রের
সন্ধিভেদ’ ১১ কিংবা ‘ঢিলের বদলে পাটকেল !’ মনে আছে ?
প্রসঙ্গত, ‘চটির সঙ্গে চটাচটি’ ঈষৎ পরিবর্তিত চেহারায় আছে ‘হাসির চোটে দম
ফাটে’ ১২ পুস্তকে ।
সেখানে
এর নাম ‘পাদুকার উপসংহার’ ।
শরৎচন্দ্র-র জুতোর প্রসঙ্গটুকু আলাদাভাবে ‘এক সত্যিকারের দুর্ঘটনা’ ১৩ নামেও বেরয় ।
মজার ব্যাপার, হেমেন্দ্র কুমার রায়-ও এই
একই শরৎ-কিসসা লিপিবদ্ধ করে গেছেন ।
তাঁর রচনাটির নাম ‘পাদুকার গঙ্গালাভ’ ১৪ ।
-------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
৭)
সাল : ১৯৪৬ (১৩৫৩)
শারদীয়া : অঞ্জলি
শিবরাম-কাহিনি : সভ্য হওয়ার – নানান্ ফ্যাচাং
‘সভ্য হওয়ার – নানান্ ফ্যাচাং’, ‘অঞ্জলি’ (১৯৪৬) । |
পিপীলিকা-জগতে
পীপ করেছেন শিবরাম ।
এই অনন্য এবং অনবদ্য কাহিনিকে একটু বদল করে ‘সভ্য সমাজের যেসব অসুবিধে’ নামে ‘গল্প নাটক অল্প না’ ১৫ বইতে স্থান দেওয়া হয় ।
এই অনন্য এবং অনবদ্য কাহিনিকে একটু বদল করে ‘সভ্য সমাজের যেসব অসুবিধে’ নামে ‘গল্প নাটক অল্প না’ ১৫ বইতে স্থান দেওয়া হয় ।
-------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
৮)
সাল : ১৯৪৭ (১৩৫৪)
শারদীয়া : রাঙা-রাখী
শিবরাম-কাহিনি : শিক্ষাদান
‘শিক্ষাদান’, ‘রাঙা-রাখী’ (১৯৪৭) । |
শিক্ষাদান
করতে গিয়ে শিক্ষালাভ !
শিকেয়
ওঠে মাস্টারি ।
নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়-এর ‘ছাত্র-চরিতামৃত’
১৬ কিংবা শিবরাম প্রণীত ‘মন্টুর মাষ্টার’ ১৭ -এর পাশাপাশি ‘শিক্ষাদান’-ও
এক স্মরণীয় নজির ।
অবশ্য,
এখানে ছাত্রের ছত্রাঘাতে নয়, নিজের লেট করার স্বভাবেই ‘টু লেট’ ঝোলার উপক্রম স্কুল-শিক্ষকের
দরজায় ।
১৯৪৭ সালেই
‘শিক্ষাদান’
সংকলিত হয় শিবরাম চক্রবর্তী-র
বড়দের বই ‘দেবতার জন্ম ও অন্যান্য গল্প সেই সঙ্গে মহা পাকিস্থানের পথে !’ ১৮ -তে ।
সংযোজিত
হল একটি আনকোরা সূচনা । কাহিনির নতুন নাম ‘শিক্ষা দেওয়া সহজ নয়’ ।
‘অকথিত
কাহিনী’ ১৯ গ্রন্থের
পঞ্চম অধ্যায়ের শেষাংশেও ভিন্ন রূপে ‘শিক্ষাদান’-ই উপস্থিত ।
আবার
‘শিক্ষালাভ’ নামে এটি রয়েছে ‘বন্ধু চেনা বিষম দায়’ ২০ -তে ।
ঐ
বইতেই ‘শিক্ষাদান’ শীর্ষক একটি একেবারেই আলাদা গল্পও রয়েছে ।
-------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
৯)
সাল : ১৯৪৮ (১৩৫৫)
শারদীয়া : আবাহন
শিবরাম-কাহিনি : মন্টুর গোয়েন্দাগিরি
‘মন্টুর গোয়েন্দাগিরি’, ‘আবাহন’ (১৯৪৮) । |
চমক চাই ! যে-কায়দাতে ফায়দা মেলে, তা-ই সই ।
এই প্রবণতার ফলে রহস্য রস যে কখন পরিণত হয়
হাস্য রসে ...
প্রচলিত গোয়েন্দা কাহিনির নামকরণ, কাঠামো, রগরগে
রচনাভঙ্গি, সব বিষয়ে টিকটিকির ঠিক-ঠিক বলে দেওয়া – শিবরাম-এর প্রসন্ন খোঁচার সম্মুখীন হয়েছে বারংবার ।
‘শার্লক হোমস দি সেকেন্ড’ ২১, ‘একটা
খুনের গল্প’ ২২, ‘দানবের জন্ম’, কল্কেকাশি
সিরিজের গল্প ২৩, উপন্যাসের মধ্যে ‘কৃতান্তের
দন্তবিকাশ’ ২৪, ‘বৃহৎ ছাগলাদ্য যুদ্ধ’ ২৫, ‘কে
হত্যাকারী ?’ – সর্বত্রই ।
ধাপে ধাপে রহস্য-প্রাসাদ নির্মাণ । অন্তে
ধাপ্পার প্রকাশ । পতন ।
‘মন্টুর গোয়েন্দাগিরি’-ও সেই ধাঁচের ।
শুধু চরিত্রদের নাম পালটে দিয়ে ‘গদাই-এর
গোয়েন্দাগিরি’ বা ‘হালকা হাসির গল্প’ শিরোনামেও এটি প্রকাশিত হয়েছে ।
-------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
১০)
সাল : ১৯৪৯ (১৩৫৬)
শারদীয়া : নবারুণ
শিবরাম-কাহিনি : সমগোত্র
‘সমগোত্র’, ‘নবারুণ’ (১৯৪৯) । |
মিস্ট্রির মত, জনপ্রিয় অলৌকিক কাহিনির প্রতিও
কটাক্ষ হেনেছেন শিবরাম চক্রবর্তী ।
‘“কত অজানারে জানাইলে তুমি কত ঘরে দিলে ঠাঁই”
(সত্য ঘটনা)’ ২৬, ‘আমার ভূত-দেখা’ ২৭, ‘দশ
নম্বর বাড়ির রহস্য’ ২৮, ‘না ভূতের গল্প নয়’ ২৯, ‘ভূত
আর ভুতো !’ ৩০, ‘দ্বিধাগ্রস্ত আমি !’ (নামান্তর –
‘নিজের ভূত নিজে দেখা !’), ‘গোলদিঘির ভূত !’, ‘ভূত না অদ্ভুত ?’ –
সবারই মনে থাকবে ।
‘সমগোত্র’-র সম গোত্রের আর এক কিসসা ‘আশ্রম পীড়া’ ৩১ ।
দুটি গল্পেরই চরিত্রদ্বয় এককালে মানুষ ছিলেন ।
-------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
১১)
সাল : ১৯৫০ (১৩৫৭)
শারদীয়া : উদয়ন
শিবরাম-কাহিনি : খেলার ঠেলা
‘খেলার ঠেলা’, ‘উদয়ন’ (১৯৫০) । |
পরপর দশটি কাহিনি ।
শিবরাম চক্রবর্তী ও প্রতুল
চন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়-এর কলম-তুলি জুটিতে অভ্যস্ত ছিলেন দেব
সাহিত্য কুটীর পূজাবার্ষিকী-র পাঠককুল ।
‘খেলার ঠেলা’-য় ছবি আঁকেন শৈল চক্রবর্তী (১৯০৯ – ১৯৮৯) ।
শিল্পী শৈল চক্রবর্তী (১৯০৯ – ১৯৮৯) । |
অবশ্য, সেই ‘পঞ্চাননের অশ্বমেধ’ গ্রন্থ ৩২
থেকেই বোধহয় শিব্রাম-শৈল এক ব্র্যাকেটভুক্ত হয়ে গিয়েছিলেন ।
লেখক-এর কথায়, “আপনার ছবিতেই আমি থাকব - ... তাহলে আর বুড়ো হবো না, বুঝলেন ।” ৩৩
হয়েছেও তাই ।
লেখক-এর কথায়, “আপনার ছবিতেই আমি থাকব - ... তাহলে আর বুড়ো হবো না, বুঝলেন ।” ৩৩
হয়েছেও তাই ।
আমাদের প্রিয় সাহিত্যিকের কখানি ফটোই বা মিলেছে
?
তার বিকল্প হিসাবে, সমস্ত সম্ভাব্য মুডে, শ্রীশৈল-র চিত্র থেকেই চেনা গেছে শিবরাম চক্রবর্তী-কে । অবিরাম ।
বয়স তাঁর বাড়েনি ।
দেব সাহিত্য কুটীর শারদীয়াসমূহের মধ্যে, ‘উদয়ন’ থেকেই শৈল-অঙ্কিত শিব্রাম-এর উদয় ।
‘খেলার ঠেলা’ শীর্ষচিত্রেই মার্কামারা কেশবিন্যাস ও বোন বিনি সহযোগে তিনি হাজির ।
তার বিকল্প হিসাবে, সমস্ত সম্ভাব্য মুডে, শ্রীশৈল-র চিত্র থেকেই চেনা গেছে শিবরাম চক্রবর্তী-কে । অবিরাম ।
বয়স তাঁর বাড়েনি ।
দেব সাহিত্য কুটীর শারদীয়াসমূহের মধ্যে, ‘উদয়ন’ থেকেই শৈল-অঙ্কিত শিব্রাম-এর উদয় ।
‘খেলার ঠেলা’ শীর্ষচিত্রেই মার্কামারা কেশবিন্যাস ও বোন বিনি সহযোগে তিনি হাজির ।
বিনি-র বেড়াল ও তার চিকিৎসা সংক্রান্ত আরও একটি
গল্প ‘অথ আয়োডিন-ঘটিত’ ৩৪ ।
-------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
১২)
সাল : ১৯৫১ (১৩৫৮)
শারদীয়া : অভিষেক
শিবরাম-কাহিনি : সত্যবাদিতার পুরস্কার !
‘সত্যবাদিতার পুরস্কার !’, ‘অভিষেক’ (১৯৫১) । |
‘সত্যবাদিতার পুরস্কার !’-এর অলংকরণে ফিরলেন চিত্রশিল্পী প্রতুল বন্দ্যোপাধ্যায় ।
ইস্কুল-কেন্দ্রিক শিশু-কিশোর সাহিত্যে অদ্বিতীয়
সুকুমার রায় বা মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য ।
শিবরাম-ও কম যান না ।
বিশেষত স্কুল বা কলেজের বোর্ডিং-জীবন
নিয়ে তাঁর বিচিত্র গল্পগুচ্ছ ।
‘ইঁদুরদের দূর করো’ ৩৫, ‘সিদ্ধিলাভ !’ ৩৬, ‘সীট + আরাম = সীটারাম’
কিংবা ‘অ-দ্বিতীয় পুরস্কার’-এ লেখক স্বয়ং একটি চরিত্র ।
আবার ‘আলেকজেন্ডারের দিগ্বিজয়’ ৩৭ বা ‘মহাযুদ্ধের
ইতিহাস’ ৩৮ প্রভৃতি হস্টেল-কাহিনিতে তিনি অনুপস্থিত ।
‘সত্যবাদিতার পুরস্কার !’-এও ।
এর সত্যবাদী নায়কটির নাম সত্যপ্রিয় । ‘শুঁড়-ওলা
বাবা’ ৩৯ বা ‘সত্যপ্রিয়র সত্যপ্রিয়তা’-র ক্ষেত্রেও তাই । গল্পত্রয়ীর মূল সুরও
কাছাকাছি ।
দেব
সাহিত্য কুটীর পূজাবার্ষিকী-তে
নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়-এর ‘অভিষেক’ হল এই শারদীয়াতেই ।
এর চার-পাঁচ বছর আগেই সৃষ্ট হয়েছেন টেনিদা । ৪০
‘অভিষেক’-এর ‘দুরন্ত
নৌকা ভ্রমণ’ গল্পে অবশ্য তিনি নেই । তবে প্যালারাম
হাজির ।
-------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
গোড়াতেই বলেছি, ‘শিশু গল্পিকা’ (১৩৪৩)-র কথা । সম্পাদক ছিলেন সুধীরচন্দ্র
সরকার
।
এই বার্ষিকীর ১৩৪৪ সনের পুনর্মুদ্রণে মিলেছে শিবরাম চক্রবর্তী-র ‘অথ আয়োডিন-ঘটিত’ । অথচ ‘শিশু গল্পিকা’-র পরবর্তী কোনো সংস্করণ থেকে গল্পটি বেমালুম বাদ দিয়ে দেওয়া হয় ।
বার্ষিকী ‘শিশু গল্পিকা’ (১৯৩৬) । |
‘অথ আয়োডিন-ঘটিত’, ‘শিশু গল্পিকা’ (১৯৩৬) । |
দেব সাহিত্য কুটীর তালিকায় পাওয়া যাচ্ছে আর একটি নাম ‘ছোটদের মাধুকরী’ (১৩৪৫) ।
প্রকৃতপক্ষে, ব্রজমোহন দাশ সম্পাদিত এই বার্ষিকীর
প্রকাশক নিউ বেঙ্গল প্রেস ।
বার্ষিকী ‘ছোটদের মাধুকরী’ (১৯৩৮) । |
‘খাদ্য-খাদক সম্বন্ধ’, ‘ছোটদের মাধুকরী’ (১৯৩৮) । |
‘ছোটদের মাধুকরী’-তে ছাপা শিবরাম-কাহিনি ‘খাদ্য-খাদক সম্বন্ধ’ ।
পরে ‘অগ্নিমান্দ্যের মহৌষধ’ শিরোনামে
সুপরিচিত ।
-------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
১৯৫৩ সালে বেরয় শিবরাম চক্রবর্তী-র ‘জন্মদিনের উপহার’ ।
গ্রন্থে, অন্যান্য রচনার সঙ্গে সংকলিত হল ‘মায়া-মুকুর’ (১৯৪০) থেকে শুরু করে ‘অভিষেক’ (১৯৫১) বার্ষিকীতে টানা প্রকাশিত লেখকের এক
ডজন হাসির গল্প ।
মূল অলংকরণ সহ ।
প্রতুল চন্দ্র
বন্দ্যোপাধ্যায়-এর প্রচ্ছদে, শিব্রাম ধরা
পড়লেন তাঁর পেটেন্ট হেয়ার স্টাইল সমেত ।
‘জন্মদিনের উপহার’ (১৯৫৩)
প্রচ্ছদ
:
প্রতুল চন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ।
|
মাঝের বছর, ১৯৫২-তে দেব সাহিত্য কুটীর বার্ষিকী ‘পরশমণি’, চকরবরতী-র পরশহীন ।
-------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
‘শারদ শিবরাম (১৯৪০ – ১৯৫১)’ বৃত্তান্ত শেষ ।
এই পর্যায়ে, হর্ষবর্ধন-গোবর্ধন সিরিজের
কোনো রচনা নেই দেব সাহিত্য কুটীর বার্ষিকীতে । ৪১
বারান্তরে এই প্রকাশনার বাদবাকি শারদীয়ায়
ছাপা শিবরাম-এর
ফিরিস্তি নিয়ে ফিরতে পারে BlOGUS ।
পাঠকদের
ইচ্ছে থাকলে তবেই ।
আপনাদের
প্রতিক্রিয়ার জন্য সাগ্রহে অপেক্ষমাণ BlOGUS ব্লগ ।
সেই
সঙ্গে ফেসবুক-এর ‘BlOGUS. A Bogus blog’ গ্রুপ :
-------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
১ বিস্তারিত বিবরণের জন্য দ্রষ্টব্য : ‘শিবরামের জীবনকথা’, অরুণা চট্টোপাধ্যায়, ‘শিরোনাম শিবরাম’, কোরক, বইমেলা ১৯৯৬ ।
২
প্রকাশক : গ্রন্থম, ১৩৬৯ ।
৩ ‘শিব্রাম অমনিবাস’ ৬, নবপত্র প্রকাশন ।
৪ ‘হর্ষবর্ধন অমনিবাস’, এশিয়া পাবলিশিং ।
৫ ‘রামধনু’, চৈত্র ১৩৪৩ ।
৬
‘রামধনু’, জ্যৈষ্ঠ ১৩৪৪ ।
৭ ‘মাসিক বসুমতী’, জ্যৈষ্ঠ ১৩৫৩ ।
৮
‘রংমশাল’, চৈত্র ১৩৪৭ ।
৯ প্রকাশক : ফাইন আর্ট পাবলিশিং হাউস, ১৩৪৮ ।
১০ দ্রষ্টব্য ‘ঘনাদা গ্যালারি’ ওয়েবসাইট :
১১ ‘আনন্দমেলা’, পৌষ ১৩৮২ ।
১২ প্রকাশক : দেব সাহিত্য কুটীর, ১৩৮৩ ।
১৩ ‘আমার ভূত দেখা’, ফাইন আর্ট পাবলিশিং
হাউস, ১৩৪৮ ।
১৪
‘স্মরণের যাদুঘরে’, হেমেন্দ্রকুমার রায়, ডি এম
লাইব্রেরি, ১৩৬৩ ।
১৫ প্রকাশক : দেব সাহিত্য কুটীর, ১৯৭০ ।
১৬ ‘শিশুসাথী’, বৈশাখ ১৩৫৬ ।
১৭ ‘রামধনু’,
আষাঢ় ১৩৪১ ।
১৮ প্রকাশক : দি বুক এম্পরিয়াম লিমিটেড, ১৩৫৪ ।
১৯ প্রকাশক : বাণীশিল্প, ১৩৮৩ (?) ।
২০ প্রকাশক : রীডার্স কর্নার, ১৩৫৫ ।
২১ ‘মৌচাক’, মাঘ ১৩৪৭ ; নামান্তরে ‘অমলের গোয়েন্দাগিরি’ ।
২২ ‘রামধনু’, আশ্বিন ১৩৫৬ ।
২৩ দ্রষ্টব্য BlOGUS ব্লগে ‘অতিথি সমাবেশ : কল্কেকাশি , পরাশর (,
ব্যোমকেশ)’ :
২৪ ‘জলছবি’ পত্রিকায় ধারাবাহিক প্রকাশিত, ১৩৪৪ (?) ।
২৫ ‘রংমশাল’-এ ধারাবাহিক, ১৩৪৮ – ১৩৪৯ ; অপর নাম
‘বর্মার মামা’ ।
২৬ ‘রংমশাল’, কার্ত্তিক ১৩৪৪ ; ‘স্যাঙাতের সাক্ষাৎ’ ও ‘বাইশ ইঞ্চি পা’ এরই পরিবর্তিত
রূপ ।
২৭ ‘রংমশাল’, বৈশাখ ১৩৪৮ ।
২৮ ‘মৌচাক’, কার্ত্তিক ১৩৫৭ ।
২৯ ‘মৌচাক’, বৈশাখ ১৩৫৮ ।
৩০ ‘মৌচাক’, আশ্বিন ১৩৫৯ ।
৩১ ‘মৌচাক’, কার্ত্তিক ১৩৫৮ ।
৩২ প্রকাশক : এম. সি. সরকার অ্যান্ড সন্স, ১৩৪২ ।
৩৩ ‘শিবরাম অদ্বিতীয়’, শৈল চক্রবর্তী, ‘যষ্টিমধু’,
শিবরাম শ্রদ্ধার্ঘ সংখ্যা, ১৩৮৮ ।
৩৪ এটিই সেই কাহিনি ‘শিশু গল্পিকা’ (১৯৩৬) বার্ষিকীতে যা প্রকাশিত হলেও, পরে বর্জিত হয় ।
‘জন্মদিনের উপহার’ (দেব সাহিত্য কুটীর, ১৩৬০) সংকলনে ‘অথ
আয়োডিন-ঘটিত’ পাওয়া যাবে । ৩৫ ‘রংমশাল’, বৈশাখ ১৩৪৯ ।
৩৬ ‘বার্ষিক শিশুসাথী’, ১৩৬৪ ।
৩৭ ‘রামধনু’, ভাদ্র ১৩৪০ ।
৩৮ ‘রামধনু’, চৈত্র ১৩৪০ ।
৩৯ ‘মৌচাক’, ভাদ্র ১৩৩৯ (?) ।
৪০ নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়-এর
প্রথম প্রকাশিত টেনিদা-কাহিনি
‘খট্টাঙ্গ
ও পলান্ন’ (১৯৪৬) ।
দ্রষ্টব্য
‘টেনিদা ট্রেজারি’ ব্লগ :
https://tenida-treasury.blogspot.in/2016/11/Khattaanga-O-Palaanna.html ৪১ প্রথম প্রকাশিত হর্ষবর্ধন কাহিনির জন্য দ্রষ্টব্য BlOGUS ব্লগে ‘হাজির হলেন হর্ষবর্ধন !’ :
-------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
শিবরাম চক্রবর্তী-র গ্রন্থপঞ্জীর বিবরণ প্রধানত গৃহীত হয়েছে শ্রী দেবাশিস মুখোপাধ্যায় সংকলিত ‘ শিবরাম চক্রবর্তীর বই-তালিকা’ থেকে,
‘শিরোনাম শিবরাম’, কোরক,
জানুয়ারি ২০০৮ সংস্করণ ।
-------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
10 comments:
লেখা আর ছবিতে ভরা এই ব্লগ অমর রহে!
অশেষ ধন্যবাদ ঋজু বাবু, Blogus-এর পাশে থাকার জন্য !
ANABADYA !
অশেষ ধন্যবাদ স্যমন্তক !
পাঠকদের মতামত না পেলে উৎসাহ হারিয়ে ফেলি ।
অনবদ্য অসাধারণ সৌরভ বাবু। শিবরাম চক্রবর্তী ওপর থেকে আশীর্বাদ দিচ্ছেন।
অশেষ ধন্যবাদ প্রিয়ব্রত বাবু ।
আমাদের এই উদ্যোগ নিতান্তই অকিঞ্চিৎকর । কোনো গবেষণা নয় । প্রিয় মানুষদের কাজ সবার সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার প্রয়াস ।
তবু যে আপনাদের মত কয়েকজনের ভাল লেগেছে, এটাই আমাদের বিশাল প্রাপ্তি ।
ভাল থাকবেন ।
বাহবা। সৌরভে আমোদিত হচ্চি। সর্বদা।
অশেষ ধন্যবাদ !
Blogus ব্লগে স্বাগত জানাই ।
আরে এটা miss করে গেছিলাম, একটা রামধনু আর শিবরাম হয়ে যাক, অনেকেই যানে না বাড়ি থেকে পালিয়ে রামধনুতে বেরিয়েছিল।
দারুণ প্রস্তাব, অর্ণব !
নিশ্চয় চেষ্টা করব ।
শিবরাম চক্রবর্তী-র কত অসাধারণ সৃষ্টির সাক্ষী থেকেছে 'রামধনু' ।
Post a Comment